স্টাফ রিপোর্টারঃ
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুলাই) কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী বিকম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম নুরুল আলম খসরু, কালিহাতী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুল ইসলাম মোমিন, ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ন চন্দ্রসহ সহস্রাধিক ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন এই হামলার সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার এবং এর হুমুকদাতাদের শাস্তি না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে।
এরআগে বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) সকালে কালিহাতী কলেজ, আরএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সাতটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি মাদ্রাসার কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রী হামলাকারীদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন পালন করেন।
এবিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, হামলার মূল আসামী আরিফুর রহমান শান্তসহ ৩ জনকে ঐ রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে হামলার শিকার আমিনুল ইসলাম আমিনের ভাই মোমিনুল ইসলাম মোমিন বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। তবে এখনো মামলা নথিভুক্ত হয়নি।
উল্লেখ্য কালিহাতী উপজেলা সদরের সাতুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবন নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। গত ১০ জুলাই মঙ্গলবার ক্রয়কৃত ভবনটি ঠিকাদার ভাঙতে গেলে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী শান্ত মিয়া (২০), সোলায়মান (২০), রুমেল (২০) এর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করে। ঠিকাদার চাঁদা না দেয়ায় ভবনটিতে ওরা তালা লাগিয়ে দেয়। পরে বিদ্যালয়ের সভাপতি শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম আমিনের উপস্থিতিতে ভবনটি ভাঙতে গেলে শান্ত ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাতুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম আমিন, কালিহাতী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রতন ও পৌর শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাইসুল ইসলাম রাসেল গুরুতর আহত হন। আহতরা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে কালিহাতী পৌর এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে বাজার ও বাসস্ট্যান্ডের সকল দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন। ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। তারা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডে টায়ার জ্বালিয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। অবরোধে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে ঘাটাইল পর্যন্ত সপ্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় মহাযানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তির শিকার হন হাজার হাজার মানুষ।
সমাবেশ থেকে বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সাংসদ হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারির বিরুদ্ধে ‘শান্ত বাহিনীকে মদদ দেয়ার অভিযোগ করেন। এতে সাংসদ হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারিকে কালিহাতীতে অবাঞ্চিত ঘোষণা, কালিহাতী থানার পরিদর্শক(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন ও সেকেন্ড অফিসার এসআই মেহেদী হাসান প্রত্যাহারের দাবি করেন।