গণবিপ্লব রিপোর্ট:
টাঙ্গাইল পৌর উদ্যান এখন গাড়ি পার্কিং, চায়ের দোকান, ডেকোরেশনের আসবাবপত্র ও পৌর উদ্যানের শহীদ বেদির উত্তর পাশে মল-মূত্র ত্যাগ করা এবং রাতে পৌর উদ্যানের উত্তর পাশে ও উত্তর-পূর্ব কোনায় অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সেবন করারও দৃশ্য মিলছে। ফলে অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে আছে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান।
কয়েক বছর আগেও যে পৌর উদ্যানটি ছিলো দখলমুক্ত। কিন্তু পৌর উদ্যানে প্রথমে ভ্রাম্যমাণভাবে চায়ের দোকান শুরু করে ব্যবসায়ীরা। কিছুদিন যাওয়ার পড়ে বাঁশের খুটি ও ত্রিফলের ছাউনি দিয়ে জাঁকজমকভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দোকানদাররা।
গাড়ি পার্কিং বন্ধ, দোকানপাট উচ্ছেদসহ মল-মূত্র ত্যাগ, অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সেবনের আড্ডা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি।
জানা যায়, পয়লা বৈশাখের মেলা, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মে দিবস অনুষ্ঠান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, পৌরসভার অনুষ্ঠানসহ কালচারাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এই পৌর উদ্যানে। সেই পৌর উদ্যানটি অসামাজিক কার্যকলাপ, মাদক সেবন, চায়ের দোকান, গাড়ি পার্কিং ও ডেকোরেশনের আসবাবপত্র রাখার কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
কয়েক বছর আগে সাবেক মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি থাকাকালীন সময়ে পৌরসভার অর্থায়নে পৌর উদ্যানের পূর্ব পাশে একটি মুক্ত মঞ্চ, পূর্ব-উত্তর কর্নারে অফিস কক্ষ, মুক্ত মঞ্চের সামনে পানির ফোয়ারা ও উত্তর পাশে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কর্য বানানো হয়। সেইগুলো এখানো অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর উদ্যানের দক্ষিণ পাশে চারটি চায়ের দোকান ও পশ্চিম পাশে পাঁচটি চায়ের দোকান রয়েছে। পৌর উদ্যানে মাঝখানে চারটি প্রাইভেটকার, তিনটি হায়েছ ও দুই গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে। পৌর উদ্যানের পশ্চিম-দক্ষিণ কর্নারে পাথর, বালু ও পিচ এর ড্রাম রাখা হয়েছে।
পৌর উদ্যানের উত্তর-দক্ষিণ পাশে ডেকোরেশনের বাঁশ দিয়ে জায়গা দখল করা হয়েছে। পূর্ব পাশের পানির ফোয়ারাটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শহীদ বেদির উত্তর পাশে অনেকেই দাঁড়িয়ে প্রস্রব করছে ও আশপাশে মাদকের বোতল এবং অসামাজিক কার্যকলাপের আলামতও চোখে পড়ে।
অপরদিকে মুক্তমঞ্চ ও অফিস কক্ষে যাওয়ার গ্রিল লাফিয়ে পূর্ব-উত্তর কর্ণারে পথ শিশুদের ড্যান্ডি সেবন করতে দেখা যায়।
রাসেল মিয়া নামে এক প্রাইভেটকার চালক বলেন, ‘এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাড়ি পার্কিং করা হয়। টাঙ্গাইল শহরের মার্কেটগুলোতে পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় এই পৌর উদ্যানে এসে গাড়ি পার্কিং করেছি। আমার মতো অনেকেই গাড়ি পার্কিং করে রেখেছে। আমি মার্কেটে কেনাকাটার জন্য আসলেই এখানে গাড়ি পার্কিং করে তারপর কেনাকাটা করি।’
পথচারী হেকমত আলী বলেন, ‘পৌর উদ্যানে আসলে ডেকোরেশনের তাবু, বাঁশ ও আসবাবপত্র চোখে পড়ে। গোডাউনের পরিবর্তে তারা এই পৌর উদ্যানকেই ব্যবহার করে থাকে। অনেক সময় ডেকোরেশনের তাবু ও ত্রিফলও শুকানো হয় এই পৌর উদ্যানে।
পৌর উদ্যানে আসা আজগর মিয়া বলেন, ‘পৌর উদ্যানের মুক্ত মঞ্চ যখন উদ্বোধন করা হলো তখন পানির ফোয়ারাটা সচল ছিল। অনেক সুন্দরভাবে পানি বের হতো। অবহেলার কারণে পানির ফোয়ারাটি অচল হয়ে পড়ে আছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন বলেন, পৌর উদ্যানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি বিষয়গুলো দেখে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিবো।