সোহেল পারভেজ:
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে তিন দিন ব্যাপি বই মেলা বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়েছে। এ বই মেলাকে কেন্দ্র করে কিছু স্বাধীনতা বিরুধী চক্রের দোষর নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে বই মেলা বন্ধ করার পায়তারা চালায়। কিন্তু সাংস্কৃতিনগরী টাঙ্গাইলের শান্তিপ্রিয় ভূঞাপুরবাসীর আত্মপ্রত্যয়ের মুখে তাদের অপকৌশল কার্যকর হয়নি। ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের প্রথম দিনে ২০ ফেব্রুয়ারি বই মেলা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে মেলা সংলগ্ন ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ মাঠে কলেজের অধ্যক্ষ অনির্ধারিত ভাবে মেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা চলাকালিন সময়ে উচ্চ শব্দে মেলামুখি করে মাইকে তথাকথিত শিল্পীদের দিয়ে বাজনা বিহীন গান গাইতে থাকেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর পর্যন্ত প্রজেক্টরের মাধ্যমে পর্দায় ছবি দেখানো হয়। তাতে করে মেলা কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের কাছে মেলার বিঘ্নসৃষ্টিকারী শব্দ দূষণের কথা বলতে গেলে তিনি কলেজ অফিস কক্ষে এসে সমাধান করবেন বলে জানালেও তিনি ঐদিন আর অফিস কক্ষে আসেননি। তাঁর এই হীন আচরণের জন্য শান্তিপ্রিয় ভূঞাপুরের সাংস্কৃতিমনা সর্বসাধারণ মনে কষ্ট অনুভব করেন। চাস্টলগুলিতে ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হয়ে এমন অসৌজন্য আচরণের কঠোর সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তার পাশাপাশি তাঁকে যাঁরা এই হীন কর্মে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের ব্যাপারেও ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। বিরুধীতা থাকার পরেও তিনদিনের বই মেলা অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে শেষ হয়েছে। প্রতিদিনই ছিল আলোচনা , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,আবৃত্তি ও নাটক। উপচেপড়া মানুষের ঢলে তিনদিনের বই মেলা ছিল ভূঞাপুরের প্রাণের মেলা।
অপর দিকে ভূঞাপুর শহরে ১২ টি কি-ারগার্টেন স্কুলে প্রায় দুই হাজারের মত ছাত্র ছাত্রী লেখা পড়া করে। এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জাতীয় দিবসে তাদের যথাযথ পারফর্ম দেখিয়ে থাকে। বিশেষ করে শিশুদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা যেমন চিত্রাঙ্কন, বাংলা হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, মার্চপাস্ট, সঙ্গীত,ক্রীড়া ইত্যাদি প্রতিযোগিতায় কেজি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা বরাবরই শীর্ষস্থানে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এবারের ২১ ফেব্রুয়ারির কোন অনুষ্ঠানে কেজি স্কুল গুলোকে কোন প্রকার অবগতি পত্র প্রদান করা হয়নি। তদুপরি অন্যা উপায়ে জেনে তারা সরকার কর্তৃক ঘোষিত সকল প্রকার কার্যক্রমে সফল অংশগ্রহণ করেছে এবং ভালও করেছে। এব্যাপারে কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন ভূঞাপুর এর সভাপতি খায়রুজ্জামান ভূঞা এ প্রতিবেদককে জানান আমরা কঠোর অধ্যবসায়ের পাশাপাশি সহশিক্ষায় কেজি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রস্তুত করে থাকি স্বাধীনতা ও জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে থাকি। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন যদি বিমাতা সুলভ আচরণের মাধ্যমে এড়িয়ে চলেন তবে ভূঞাপুরের শিশুরা মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তিনি প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমরা তো মিয়ানমারের রোহিঙ্গা স্মরনার্থী শিশুদের শিক্ষা দান করছি না, তারা এ এলাকারই সন্তান তাদেরও আছে লেখাপড়ার পাশাপাশি সহশিক্ষা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অধিকার।