মো. লিটন সরকারঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন উদ্যাপিত হয়েছে। জলছত্র, পীরগাছা, দরগাচালা এই তিনটি মিশনে প্রায় ১২ হাজার খ্রিষ্টীয় পরিবারে নানা আয়োজনে উৎসব মুখর পরিবেশে বড়দিন পালন করা হয়।
বড়দিন উপলক্ষ্যে ২৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত জলছত্র মিশনারী গির্জায় যীশুর জীবনভিত্তিক গীতিনাট্য মঞ্চস্থ হয়।
রাত ১২.০১ মিনিটে জলছত্র কর্পোস খ্রিষ্টি ধর্ম প্যারিস, মিশনারী গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বড়দিনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফা. এ্যাপোলো রোজারিও, সিএসসি। প্রার্থনা শেষে গীর্জার সামনে খ্রিষ্টীয় তরুণ-তরুণীরা কীর্তনে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে।
উৎসবের আলোয় ভরিয়ে তুলতে এ এলাকার খ্রিস্টানদের মধ্যে সাজ সাজ রব কদিন আগে থেকেই দেখা যাচ্ছিল। বড়দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা ২৫ ডিসেম্বর(শুক্রবার) সকাল ৮.৩৫ মিনিটে জলছত্র গীর্জায় মিসা (প্রার্থণার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি) দিয়ে শেষ হয় বড়দিনের ধর্মীয় কার্যক্রম। পীরগাছার গীর্জায় মিসা অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯ টায়।
পরে সারাদিন অসংখ্য তরুণ-তরুণীকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেছে। বড়দিন উপলক্ষে প্রত্যেক বাড়িতে ছিল পিঠা-পুলি খাওয়ার ধুম। বিভিন্ন এলাকায় আয়োজন করা হয় বিশেষ ক্রিড়া প্রতিযোগিতা, ফুটবল, ক্রিকেট খেলা, অংশ নেয় খ্রিস্টীয় তরুণ-তরুণীরা। বিভিন্ন গ্রামে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী খ্রিস্টীয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, মেতে উঠে আবাল বৃদ্ধ বনিতা।
উৎসব আয়োজনের শেষ পর্যায়ে খুঁটিনাটি কাজ ও নিমন্ত্রণ নিয়ে সময় পাড় করেছেন তারা। দিনটি উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পরিবারগুলো বেথেলহামের আবহ সৃষ্টি করতে বাড়িতে বাড়িতে তৈরি করেছে প্রতীকী গো-শালা। গো-শালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর ঝলকানিতে দৃষ্টিনন্দন ক্রিসমাস ট্রি এবং গির্জাও সাজানো হয়।
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে মধুপুর উপজেলার খ্রিস্টান অধ্যুষিত গড়াঞ্চলে ছিল বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সর্বত্রই কঠোর টহল দিতে দেখা গেছে।