মধুপুর প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের মধুপুরে মন্দিরের জমি দখল করে স্কুল ও শিক্ষক সমিতির বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মধুপুরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দিরের জমিতে মুকুল একাডেমী কিন্ডারগার্টেন এবং প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বহুতল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
মন্দিরের জমিতে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন শ্রী শ্রী মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দির ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার আর্য্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রী শ্রী মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দির’র তৎকালিন পরিচালক ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী শ্রীমতি মহারানী হেমন্ত কুমারী দেবীর উত্তরসুরিদের নামে আরওআরভূক্ত ১০ একর ৬৪ শতাংশ জমি অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে গেজেট করেশ করেন সরকার। স্বাধিনতা পরবর্তী সময়ে মধুপুরের কতিপয় অসাধু হিন্দু-মুসলিম ব্যক্তি জাল আমমোক্তা করে জমিগুলো ভাগ-ভাটোয়ারা করে নেন। জমিগুলো উদ্ধারে আদালতের দ্বারস্থ হন বর্তমান শ্রী শ্রী মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দির কমিটি।
১১/১৪ ও ৫০/১৫ নং মামলার প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল সহকারি জজ এবং যুগ্ম জেলা জজ আদালত পৃথকভাবে জমিগুলো ব্যক্তিমালিকানা নয়,দেবত্ব স্ট্রেটের সম্পত্তি উল্লেখ করে রায় প্রদান করেন।
অবৈধভাবে বহুতলতল ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ ও তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে শ্রী শ্রী মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার আর্য্য জানান,স্কুল ও শিক্ষক সমিতি কর্তৃপক্ষ যাদের কাছ থেকে জমি নিয়েছেন তারা মূলত জমির মালিক নন। জমির প্রকৃত মালিক হলো দেবত্ব স্ট্রেট অর্থাৎ শ্রী শ্রী মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দির।
মুকুল একাডেমীর প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা কিন্ডারগার্টেন’র সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান,আমি যাদের কাছ থেকে জমি নিয়েছি তাদের মধ্যে তিলক কুমার বর্মমণ স্কুলের বহুতল ভবন নির্মাণ কমিটির সদস্য। তবে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি জানান,কমিটির অনুমতি ছাড়া দেখানো যাবে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.মফিজ উদ্দিন জানান,জমিটি ডিসি’র খাস খতিয়ানের ছিল,তবে আমি সিস্টেম করে সমিতির নামে রেকর্ড করেছি। কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি জানান,মন্দির কমিটি আমাদের এ জমির বাদীই নয়,আমি কাগজপত্র দেখাবনা এমনকি কোন সংবাদকর্মিকেও দেখাব না।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান,জমিগুলো যেহেতু দেবত্ব স্ট্রেটের সেহেতু বিষয়টি আমি তদন্তকরে দেখব।