পাকিস্তানী শোষণের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মুক্তি সংগ্রামে জীবনবাজি রেখে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন প্রখ্যাত আইনজীবি আবদুল আলী সিদ্দিকীর জ্যেষ্ঠ সন্তানদ্বয় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করতে গিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর চরম রোষানলের শিকার হন সিদ্দিকী পরিবার। তৎকালীন প্রশাসনের প্রত্যক্ষ নির্দেশে সিদ্দিকী পরিবারের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভস্ম করে দেওয়া হয়। নীড়হারা পাখির মতো পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে এখানে ওখানে রাত্রি যাপন করতে থাকেন সবার প্রিয় কিশোর মুরাদ সিদ্দিকী। ১৯৭১ এর সেই ভয়াল মূহুর্তে মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকু ছিলোনা সিদ্দিকী পরিবারের সদস্যদের। প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিবেশে সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দূর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বঙ্গবীরের নেতৃত্বাধীন কাদেরীয়া বাহিনী। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ হয়। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে সিদ্দিকী পরিবারের সুনাম এবং সুখ্যাতি।
’৭৫ এর পনের আগস্ট সুবহে সাদিকের সময় সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ঘটে যায় ইতিহাসের এক মর্মান্তিক ঘটনা। বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে (শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ব্যতীত) শাহাদাত বরণ করেন। সেদিনও সূর্যোদয় হয়েছিল পৃথিবীতে, কিন্তু স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল জনজীবন, থমকে গিয়েছিলো কালের প্রবাহ। বঙ্গবন্ধুর আশির্বাদপুষ্ট আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতারাই সেদিন জাতির জনকের খুনিদের সাথে আঁতাত করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করতে দ্বিধাবোধ করেননি। কিন্তু ইতিহাসের জীবন্ত কিংবদন্তী বঙ্গবন্ধুর স্নেহ ধন্য আদর্শিক সন্তান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী পিতার খুনীদের সাথে আপোষ করেননি। রক্তাক্ত ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবীরকে বাকরুদ্ধ করে দেয়! যে বিশাল বটবৃক্ষের ছায়াতলে থেকে নির্ভাবনায় পথ হেঁটেছেন, সেই হিমালয়সম মানুষটির নির্মম হত্যাকাণ্ডে তিনি চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু বুকে যার আগ্নেগিরির দাবানল খেলা করে; তাকে দমিয়ে রাখার সাধ্য কার? ১৫ই আগস্ট দিরাগত রাত্রিতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বঙ্গবীর (লিফলেটের মাধ্যমে) ঘোষণা করেন–
“নরঘাতকেরা জাতির জনকের, তিনপুত্র শেখ জামাল, শেখ কামাল, শেখ রাসেলকে হত্যা করতে পারলেও তাঁর আদর্শের চতুর্থ সন্তান আমি কাদের সিদ্দিকী বেঁচে আছি। পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ আমরা নেবোই নেবো।”
১৫ই আগস্টের সেই রক্তঝরা দিন/ বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম
মাতৃভক্ত সন্তান মায়ের নির্দেশেই পিতৃহত্যার বদলা নেয়ার জন্য অজানা পথের উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়েন। মায়ের স্নেহ, প্রেয়সীর ভালোবাসা, সন্তান সম ছোট ভাই-বোনদের করুণ চাহনি, সর্বোপরি পরিবারের সবার জীবনকে এক কঠিন অনিশ্চয়তায় রেখে পাড়ি জমান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। তৎকালীন সামরিক জান্তার কাছে বঙ্গবীর হয়ে ওঠেন এক মূর্তিমান আতঙ্ক। বঙ্গবীরকে হত্যা করতে না পেরে মোশতাকের চ্যালাচামুণ্ডারা বঙ্গবন্ধুর আর্শিবাদপুষ্ট সিদ্দিকী পরিবারের উপর শুরু করেন নির্মম নিপিড়ন। সেই নিপিড়নের হাত থেকে রক্ষা পাননি মোহাম্মদপুর গভঃ বয়েজ স্কুলের ৭ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত বঙ্গবীরের সন্তানসম ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকীও। একটা আদর্শকে জিইয়ে রাখতে গিয়ে পর্বতসম ব্যাথা বুকে ধারণ করে সবার অতি আদরের দুলাল ১৪ বছরের কিশোর মুরাদ সিদ্দিকীকেও চলে যেতে হয় পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে।
মোহাম্মদপুর গভ: বয়েজ হাইস্কুল থেকে ভারতের শিলিগুড়ি হাইস্কুল, ভ্ন্নি আবহ, নতুন সহপাঠি আর নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে কঠিন হলেও পড়াশোনায় ছেদ ঘটাতে পারেনি। সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তন হয় স্কুল, জীবন থেকে অনেক চেনামুখ হারিয়ে যায়, আবার অনেক মানুষ মনের মণিকোঠায় স্থান করে নেয়। এটাই হয়তো জীবনের ধর্ম-
যেমনটি লিখেছিলেন কবি আল মাহমুদ–
“কিছু ফেলে আসা আরা কিছু ফিরে পাওয়া
এ নিয়েই জীবনের নাওখানি বাওয়া।”
৭ম শ্রেণীর চূড়ান্ত পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে মুরাদ সিদ্দিকী ভর্তি হন বর্ধমান টাউন স্কুলে। বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে সফলতার সাথে এস এস সি পাশ করেন। বিখ্যাত আশুতোষ কলেজ থেকে তিনি প্রথম বিভাগে এইচ এস সি পাশ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন উপমহাদেশের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদিকে বাংলাদেশে পর পর ঘটতে থাকে নানা অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান। অবস্থা বেগতিক দেখে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে বাংলাদেশের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বসে স্বৈরাচার সামরিক সরকার।
১৯৮৩ সাল, সিদ্দিকী পরিবারের উপর স্বৈরাচার সরকারের নিপিড়ন কিছুটা শিথিল হয়ে আসে। দেশে ফিরে আসেন মুরাদ সিদ্দিকী। ভর্তি হন সরকারী সা’দত কলেজে। রাজনীতি যার ধমনীর শিরায় শিরায় প্রবাহমান, সে কি করে রাজনীতি থেকে নিজেকে আগলে রাখবে? টাঙ্গইল জেলা ছাত্রলীগের মৃতপ্রায় সংগঠনের হাল ধরেন মুরাদ সিদ্দিকী। তাঁর নেতৃত্ব পেয়ে জেলা ছাত্রলীগে প্রাণের সঞ্চার হয়। দূর্রার গতিতে সংগঠনের কার্যক্রম চলতে থাকে। মুরাদ সিদ্দিকী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সাংগাঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল জুড়ে প্রবল জনমত গড়ে তোলেন । ক্নিন ইমেজ, প্রখর মেধা, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, ক্যারেশম্যাটিক নেতৃত্বের কারণে তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্ব মহলে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মুরাদ সিদ্দিকী। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে টাঙ্গাইলে গতির সঞ্চার করতে গিয়ে সামরিক সরকারের রোষানলে পড়েন মুরাদ সিদ্দিকী। নিয়তির নির্মম পরিহাস!– দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করার অপরাধে কারাবরণ করতে হয় তাঁকে। স্বৈরাচার পতনের পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।
১৯৯৬ সালের ১২ই মে সন্ধ্যায়– বাসাইল কালিহাতী গোপালপুরের উপর দিয়ে বয়ে যায় স্মরণকালের ভয়াবহ ঘুর্ণিঝর! বাসাইলের মিরিকপুর, কাউলজানি, নাইকানবাড়ি; কালিহাতীর বল্লা, রামপুর; গোপালপুরের মির্জাপুর, ধোপাকান্দি, ঝাওয়াইল অঞ্চলের ঘরবাড়ি , মানুষজন, গবাদি পশু, ক্ষেতের ফসল, গাছপালা সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে, আহত এবং পঙ্গুত্ববরণ করেন অনেক মানুষ। মুরাদ সিদ্দিকী সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে ঝাপিয়ে পড়েন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবায় শুশ্রূষায়। আহত মানুষদের অতিদ্রুত চিকিৎসা দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। জেলার একটিমাত্র বড় হাসপাতাল টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিজস্ব উদ্যোগে জেনারেটর সেট করে মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা করেন। ঔষধ এবং খাবারও সরবরাহ করেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের সেই ক্রান্তিলগ্নে টাঙ্গাইল জেলার প্রতিটি উপজেলা, গ্রাম-গঞ্জ, পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে সংগঠনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য নিরলসভাবে শ্রম দিতে থাকেন মুরাদ সিদ্দিকী তথা সিদ্দিকী পরিবারের সদস্যবৃন্দ। সেই শ্রমের ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হয় টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগ। টাঙ্গাইল সদর সহ জেলার প্রায় সব ক’টি আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা ’৯৬ এর জাতীয় সংসদ নির্রাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহন করেন।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! দলের সাথে বনিবনা না হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করে নতুন দল গঠন করেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক পুত্র বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ে মুরাদ সিদ্দিকীর মাথায়। একদিকে পিতৃতুল্য ভাই অন্যদিকে রক্ত মাংস পানি করে গড়ে তোলা প্রিয় সংগঠন আওয়ামীলীগ! কোন দিকে যাবেন তিনি? অতঃপর স্বতন্ত্রভাবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর- দেলদুয়ার) আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন, কিন্তু পারিবারিক চাপে ভাইয়ের গড়া দল থেকে নির্বাচন করতে বাধ্য হন তিনি। টাঙ্গাইল-৫ থেকে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগগ্রহন করে ৬৭,১৬৮ ভোট পেয়ে দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন মুরাদ সিদ্দিকী।
২০০৩ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে একটি প্রহসনের মামলায় কারাবরণ করেন আম জনতার প্রিয় নেতা মুরাদ সিদ্দিকী। ২০০৬ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভায় বসবাসরত নাগরিকদের উপর পৌরসভার পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেয়া হয় ট্যাক্সের ভারি বোঝা। বিবেকের তাড়না থেকে পৌর এলাকার জনসাধারণকে সাথে নিয়ে অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলেন মুরাদ সিদ্দিকী। মাত্র সাত মিনিটের মাথায় আন্দোলনের মুখে অতিরিক্ত আরোপিত ট্যাক্স প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন পৌর কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ দশ বছর যার সুবিধা ভোগ করেন টাঙ্গাইল পৌরবাসী।
২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারী কেয়ারটেকারের ছদ্মবেশে দেশের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বসা সামরিক সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দীর্ঘ ২০ মাস কারাগারে থাকেন মুরাদ সিদ্দিকী। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তাঁর জীবনে দীর্ঘ চার বছর কারাগারে অতিবাহিত হয়। কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে মহাজোট এবং চারদলীয় জোটের বিপরীতে প্রার্থী হয়ে ৪০,৪৫৬ ভোট পেয়ে নিজের অবস্থানের জানান দিতে সক্ষম হন মুরাদ সিদ্দিকী। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে “মানুষ মানুষের জন্য”– এই স্লোগান বুকে ধারণ করে দানবের বিরুদ্ধে মজলুমের পক্ষে মাদক, ইয়াবা, ভুমিদস্যু এবং সন্ত্রাসমুক্ত টাঙ্গাইল গড়ার এক মহান অঙ্গীকার নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে নামেন সিদ্দিকী পরিবারের সন্তান মুরাদ সিদ্দিকী। টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে নির্বাচন করে ৫৯,৭৬৩ ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জনশ্রুতি আছে–এই নির্বাচনে মুরাদ সিদ্দিকী বিজয় অর্জন করেছিলেন, কিন্তু অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
একথা সত্য যে, বর্তমান পৃথিবীতে কোন মানুষই ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে না। ব্যক্তি মুরাদ সিদ্দিকীও রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ, তিনিও এর বাইরে নন। কিন্তু যতদূর আমরা জানি– মুরাদ সিদ্দিকীর চরম শত্রুও দাবী করতে পারবে না– মুরাদ সিদ্দিকী কোন প্রকার দূর্ণীতি, অন্যায়, অবিচার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ভুমি দখল এসবের কোনোটির সাথে তার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা আছে। তিনি কখনো অন্যায়ের কাছে পরাজয় স্বীকার করেননি, এবং কি অন্যায়কে প্রশ্রয়ও দেননি। ন্যায়ের পথে অবিচল থাকতে গিয়ে জীবনে অনেক তীক্ততার মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি।
ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল আজ দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে একটি অবহেলিত নগরীতে পরিণত হয়েছে। টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার স্বার্থে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী পরিবারের গর্বিত সদস্য জনতার কাতারে দণ্ডায়মান টাঙ্গাইলবাসীর মুরাদ সিদ্দিকীকে খুবই প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই যিনি টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় পরিবারগুলোকে নানামাত্রিক সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। তাঁর মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলাতেই প্রায় ৩৬,০০০ (ছত্রিশ হাজার) মানুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহন করেছেন। মুরাদ সিদ্দিকী নিজ উদ্যোগে পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি‘র মাধ্যমে সদর উপজেলার অনেক র্দূগম অঞ্চলে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। দেশ সমাজ এবং মানুষের প্রতি এমন মমত্ববোধ যে মানুষটির মাঝে বিরাজ করে, সুন্দর একটি সমাজ গড়ার স্বপ্ন যিনি মনের মণিকোঠায় লালন করেন, এমন একজন মহান মানুষ, এমন একজন মহান নেতার জন্য টাঙ্গাইলের মাটি ও মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতীক্ষা করে আসছে। আমাদের বিশ্বাস– একদিন সবার এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হবে ইনশাআল্লাহ। সত্য ও সুন্দরের আলোয় আলোকিত হবে টাঙ্গাইল, আমরা পাবো এক শক্তিমান অভিভাবক, মহান নেতা, দক্ষ কাণ্ডারী।
মা, মাটি মানুষের প্রতি মুরাদ সিদ্দিকীর ভাবনা আর কবি আল মাহমুদের দেশভাবনা; যেনো একই বৃন্তে গাঁথা–
শ্রমিক সাম্যের মন্ত্রে কিরাতেরা উঠিয়েছে হাত
হিয়েন সাঙ্গের দেশে শান্তি নামে দেখো প্রিয়তমা,
এশিয়ায় যারা আনে কর্মজীবী সাম্যের দাওয়াত
তাদের পোষাকে এসো এঁটে দেই বীরের তকোমা।
আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বণ্টন
পরম স্বস্তির মন্ত্রে গেয়ে ওঠো শ্রেণীর উচ্ছেদ,
এমন প্রেমের বাক্য সাহসিনী করো উচ্চারণ
যেন না ঢুকতে পারে লোকধর্মে আর ভেদাভেদ।
–––––––––––––––––––––––
লেখক: মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান মনি আরজু
সাবেক ছাত্রনেতা ও রাজনীতিক