মো. আল-আমিন খানঃ
শেষ পর্যন্ত টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বটতলা থেকে আটক মুক্তাদির আলম বাহারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাতে এ দুটি মামলা দায়ের করেন টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ। আটককৃতদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় মানব পাচার মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটির তদন্তকারি কর্মকর্তা মডেল থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আওয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাতে টাঙ্গাইল পৌরসভার আকুর টাকুর বটতলাস্থ সিরাজুল ইসলামের বাসার ভাড়াটিয়া ও বেড়াবুচনা সবুজবাগ এলাকার মো. মনসুর আলীর স্ত্রী বিথী বেগম (৩৫) সহ চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার হাজী চান মিয়া গ্রামের সওদাগরের বাড়ি গ্রামের ইউনুছ সওদাগরের ছেলে মুক্তাদির আলম বাহার ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাশিনগর দক্ষিণপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মো. রফিক (৩৫) কে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬ বোতল ভারতীয় তৈরি ফেনসিডিল ও ৮৬ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক টাঙ্গাইল পৌরসভার আকুর টাকুর বটতলাস্থ সিরাজুল ইসলামের বাসার ভাড়াটিয়া ও বেড়াবুচনা সবুজবাগ এলাকার মো. মনসুর আলীর স্ত্রী বিথী বেগম (৩৫) তার ভাড়াকৃত সাবালিয়াস্থ ১০ তলা টাওয়ারের ১০ তলার পশ্চিম পার্শ্বের ফ্লাটে দেহ ব্যবসা চালানোর কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান তিনি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আকুর টাকুর পাড়াস্থ কতিপয় ব্যক্তি জানান, চট্টগ্রাম থেকে আগত বাহার কিভাবে আর কোন কারণে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন মহলে এত জনপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিনত হলো এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই এ এলাকা জুড়ে চলছিল নানা আলোচনা আর সমালোচনা। তবে এ স্বত্তেও খুব অল্প দিনেই তার টাঙ্গাইলের ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচয়েই প্রকাশ পায় তারও ব্যক্তি পরিচয়। একই সাথে জানা যায় বাহারের মালিকানায় পরিচালনায় জেলার অসংখ্য জুয়ার মাঠের খবর। তবে এ জুয়ার মাঠ গুলো ধারাবাহিকভাবে না চলার কারণে আরো রহস্যের জন্ম নেয় বাহারকে ঘিড়ে। এর কিছুদিন পরেই বেশ কিছু ইয়াবা কাগমারা এলাকার বাদলকে নিয়ে আটক হন বাহার। তবে খুব অল্প কিছুদিন জেল খেটে আবার বের হয়ে আসেন। তখনই প্রকাশ পায় তার এই মাদক ব্যবসা। সে মাদক ব্যবসার পাশাপাশি চলতি বছরের শুরুর দিকে আকুর টাকুর পাড়াস্থ মরহুম আব্দুল খালেকের ছেলে রাজিবকে নিয়ে সামুদ্রিক মাছসহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের হোটেল স্যানডি রেস্টুরেন্ট চালু করেন। এ রেস্টুরেন্টের অন্তরালে ওই ভবনের তৃতীয় তলায় চলে দেহ আর মাদক ব্যবসা। কক্সবাজার থেকে সামুদ্রিক মাছের সাথে ইয়াবার বড় চালান এনে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করে থাকেন। এরই মাঝে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ পায় বাহারের মাদক আর নারীসহ আটক হওয়ার গুঞ্জন। তবে মাত্র ৬পিছ ফেনসিডিল আর ৮৬ পিছ ইয়াবাসহ বাহার আটক হয়েছে এ তথ্য মেনে নেয়া অবিশ্বাস্য হলেও বাহারকে মানব পাচার আর মাদক মামলায় আটক করা নিয়ে এ এলাকায় দেখা দিয়েছে অনেকটা স্বস্তি এসেছে বলেও জানান তারা। এ ধরণের মুখোশধারী মানুষ গুলোর কারণে টাঙ্গাইলে এখন মাদকের এই ভয়াবহ বিচরণ দেখা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। তবে বাহার এলাকার যুব সমাজের ঘনিষ্ট জন ছিল বলে তার বিরুদ্ধে কখন কেউ কথা বলতে সাহস পায়নি বলেও জানান তারা।