গণবিপ্লব রিপোর্টঃ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী হাট স্থানীয় হুন্ডি ব্যবসায়ী লিটন মণ্ডলকে ইজারা দেয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গোপালপুর-ভূঞাপুরের সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামানের ডিও মূলে অত্যন্ত কমমূল্যে দেশেল দ্বিতীয় বৃহত্তর গরুর হাটটি ইজারা দেয়া হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।
জানাগেছে, প্রথম পর্যায়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ০৫.৩০.৯৩১৯.০০০.০৪০১.২০১৬-৮২ স্মারকমূলে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, মাটিকাটা ও চর চন্দনী হাটের টেন্ডার আহ্বান করে। কিন্তু ইজারা গ্রহিতা না থাকায়(মূলত: কূটকৌশলের অংশ) কর্তৃপক্ষ গত ১০ এপ্রিল ০৫.৩০.৯৩১৯.০০০.০৪০১.২০১৬-২৪৮ স্মারকমূলে পুনঃদরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রে গোবিন্দাসী হাটের বিগত তিন বছরের সরকারি সম্ভাব্য গড় মূল্য দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ২৬০ টাকা। গড় মূল্যের উপর ১০% বর্ধিত করে সংশোধিত সম্ভাব্য সরকারি হাটমূল্য ধরা হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৮৬ টাকা। এত অধিকমূল্যে হাট ইজারা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় দরপত্রে অংশ গ্রহন করতে দর কমানোর জন্য স্থানীয়রা অপেক্ষা করছিল। ফলে সরকার ওই হাটে খাস কালেকশন করতে থাকে।
সূত্রমতে, সরকারের খাস কালেকশনের উপর ১০% বেশিমূল্য নির্ধারণ করে গোবিন্দাসী হাটটি স্থানীয় লিটন মণ্ডলকে ইজারা দেয়ার জন্য গোপালপুর-ভূঞাপুরের সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে চাহিদাপত্র(ডি.ও. নং-বাজাস এমপি/১৩১ টাঙ্গাইল-২/২০১৪-২৫২, তাং-২৪/০৪/২০১৬ইং) দিয়ে জোর সুপারিশ করেন। একই ভাবে খাস কলেকশনের উপর ১২% বেশিমূল্যে হাটের ইজারা পেতে স্থানীয় ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধার ছেলে মো. সেলিম মৃধা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কাছে গত ১৬ মে আবেদন করেন। গত ১৯ মে(বৃহস্পতিবার) খাস কালেকশনে হাটের ইজারা বাবদ আদায় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা। ওই হিসেবে হাটের ৪৮ সপ্তাহে(প্রতি সপ্তাহে ২ দিন হাটবার হিসেবে) মোটমূল্য হয় ৩ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার টাকা, যা দরপত্রে নির্ধারিত সরকারি মূল্যের চেয়ে ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৪ টাকা বেশি।
অথচ গোপালপুর-ভূঞাপুরের সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে গোবিন্দাসী হাট হুন্ডি ব্যবসায়ী লিটন মণ্ডলকে ইজারা দেয়ার জন্য ডিও(চাহিদাপত্র) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ওই হাটের প্রতিবেদন চেয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কাছে পত্র(স্মারক নং-৪৬.০৪১.০৩০.০৪.০০.০০৪.২০১১-১৩৮, তাং-১৬/০৫/২০১৬ইং) পাঠায়।
সূত্রমতে, অজ্ঞাত কারণে হাটের খাস কালেকশনের গড় মূল্যের চেয়ে অন্তত ২০%-২৫% কমমূল্য দেখিয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী কমিশনার(মূল্যায়ন) স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসন-২ শাখায় প্রতিবেদন গত ২৫ মে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। ফলে সরকারের বিপুল অংকের রাজস্ব কম হওয়ার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।