গণবিপ্লব রিপোর্টঃ টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির সার্বক্ষণিক সঙ্গী কাদের জোয়ার্দ্দারের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন ও তিনটি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। কাদের জোয়ার্দ্দার পুলিশকে জানান পিস্তল দুটি মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির, মেয়র তার কাছে রাখতে দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করতেও বলেছেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) ওসি গোলাম মাহফীজুর জানান, অস্ত্র উদ্ধারের পর গত ৩০ জুলাই(বৃহস্পতিবার) গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এতে মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, কাদের জোয়ার্দ্দার ও নাসিরুদ্দীন নুরুকে আসামি করা হয়। শুক্রবার কাদের জোয়ার্দ্দারকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামীকাল শনিবার রিমান্ড চাওয়া হবে। তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে তদন্ত শেষে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়া সম্ভব হবে। এরআগে অবশ্য বিভিন্ন সময়ে মেয়রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ নানা অপরাধের ৩৭টি মামলা হয়েছে। অবশ্য এর কোনোটিতেই তাঁকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি।
পুলিশ জানায়, গত ৩০ জুলাই(বৃহস্পতিবার) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী নামক স্থানে কাদেরের বাড়ি থেকে একটি ও তাঁদের শ্যালো মেশিনঘরের মাটির নিচ থেকে অপর অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। এরআগে গত ১৬ জুলাই রাতে পৌর মেয়রের শহরের বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। এরমধ্যে কাদের জোয়ার্দ্দারও ছিলেন। পরে কাদের জোয়ার্দ্দার আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে খবর ছিল, কাদেরের কাছে মেয়রের অস্ত্র আছে। এর ভিত্তিতেই গত ৩০ জুলাই সকাল ১০টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের রাবনা বাইপাস মোড় থেকে কাদেরকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ(ওসি-ডিবি) গোলাম মাহফীজুর রহমানের নেতৃত্বে কাদেরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে সঙ্গে নিয়েই অস্ত্র দুটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরো জানায়, কাদের জোয়ার্দ্দার পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছেন, কয়েক মাস আগে শহরের কলেজপাড়ায় মেয়রের বাসার বৈঠকখানায় এই অস্ত্র দুটি তাঁর কাছে রাখতে দেয়া হয়। প্রয়োজনে ব্যবহার করতেও বলা হয়। মেয়রের সামনে অস্ত্র দুটি তাঁর কাছে দেন মেয়রের দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত নাসিরুদ্দীন নুরু। পিস্তলের সঙ্গে একটি গুলির খোসা পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, ওই গুলিটি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও তিনটি গুলি পিস্তলের সঙ্গে পাওয়া গেছে।
তাঁদের মধ্যে মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও নাসিরুদ্দীন নুরু টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন। তবে ওই মামলার সঙ্গে কাদের জোয়ার্দ্দারের কোনো সম্পৃক্ততা পুলিশ এখনো পর্যন্ত পায়নি।
এরআগে গত ২৭ ডিসেম্বর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির মামাতো ভাই পুনমকে চারটি অস্ত্রসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় মেয়রের অপর দুই ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
এ ছাড়া কয়েক মাস আগে পুলিশ একটি বিদেশি পিস্তলসহ শহরের বিশ্বাস বেতকা থেকে স্বপন নামক এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। স্বপন পুলিশকে জানায়, তাঁর কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্রটি ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন দিয়েছিল। ওই মামলায় কাকন ও স্বপনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে।