মধুপুর প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুরের বনাঞ্চলের আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব ওয়ানগালা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। এ সময় উপজেলায় যাজকীয় জীবনের ৬০ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে পীরগাছা সেন্ট পৌলস্ ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার ইউজিন ই হোমরিক সিএসসিকে সংবর্ধনা ও অভিনন্দিত করা হয়।
খ্রিস্টযোগ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রোববার(১৫ নভেম্বর) সকালে পীরগাছা সেন্ট পৌলস্ ধর্ম পল্লীর উদ্যোগে উপজেলার পীরগাছা সেন্ট পৌলস্ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপি ওই ওয়ানগালা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
পরে ফাদার ইউজিন ই হোমরিক সিএসসি’র ফটো সম্বলিত পোস্টকার্ড, ২০১৬ সালের ক্যালেন্ডার, তার জীবনের উপর রচিত গানের বই ও স্মরণিকার মোড়ক উম্মোচন করা হয়।
ধর্মপল্লীর সহকারি পাল পুরোহিত ফাদার ডনেল ক্রুশ সিএসসি’র সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, আর্চ বিশপ পনেন পৌল কুবি সিএসসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছরোয়ার আলম খান আবু, হলিক্রসের প্রতিনিধি নটেরডম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদম প্যারেরা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, ওসি সফিকুল ইসলাম।
অণ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, টিআইবি’র সনাক সভাপতি ডা. মীর ফরহাদুল আলম মনি, জলছত্র ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত অ্যাপোলো রোজারিও, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক, কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চলের কর্মকর্তা অপূর্ব ম্রং, আদিবাসী নেতা অজয় এ মৃ, ওয়ার্ল্ড ভিশন জলছত্র এডিপি ম্যানেজার পরিতোষ রেমা, মার্টিন মিহির মৃ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আদিকাল থেকে গারোদের বিশ্বাস, মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য তার প্রাকৃতিক যা কিছু সম্পদ সবই দেবতার সৃষ্টি এবং দান। দেবতা তাতারা পৃথিবী, সালজং পার্থিব ফসলাদি এবং সুষিমি রোগ নিরাময়কারী ও ঐশ্বর্য প্রদানকারী। তাই দেবতাদের দানকৃত সম্পদ বা ফসলাদি ব্যবহার করার আগে আদিবাসী প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ গারোরা তাদের উৎপাদিত ফসলাদি ওই তাতারা, সুষিমি এবং সালজং দেবতার উদ্দেশে উৎসর্গ করে। দেবতাদের উৎসর্গ করা ছাড়া গারোরা তাদের ফসল ব্যবহার করে না। ফসল উৎসর্গের এই আনুষ্ঠানিকতাই গারো ভাষায় ‘ওয়ানগালা’ বা নবান্ন উৎসব।
