গণবিপ্লব রিপোর্টঃ
টাঙ্গাইল পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রবীণ ও নবীন প্রার্থীর লড়াইয়ে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা থাকলেও প্রচারণার শেষ দিকে এসে পিছিয়ে পড়েছেন নবীন প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী জামিলুর রহমান মিরন এরআগে দুইবার পৌরপিতা ছিলেন। বয়স যাই হোক না কেন দুইবার ‘গদিতে’ থাকায় ভোটারা তাকে প্রবীণ প্রার্থী হিসেবেই অভিহিত করছেন। তিনি প্রথমবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে কৃষক শ্রমিক জনতালীগে যোগ দিয়ে ২০০৪ সালে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলেও ২০১১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন। জামিলুর রহমান গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কারাবরণ করায় প্রায় দু’বছর দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু এবারই প্রথম মেয়র পদে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন এ কারণেই তিনি নবীন প্রার্থী। তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি এবং সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শামসুল হকের ছেলে।
তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দল টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
জামিলুর রহমান মিরন নৌকা এবং মাহমুদুল হক সানু ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে। অনেক ভোটার মনে করেন, মিরন অভিজ্ঞ, দক্ষ এবং জনপ্রিয় মেয়র ছিলেন। এবার তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার সাথে যোগ হয়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় শক্তি। সুতরাং তিনি এবারও ভোটারদের মন জয় করে শতাব্দী- প্রাচীন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হতে পারেন।
এদিকে, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু ভদ্র ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। অনেক ভোটার মনে করেন, ‘ক্লিন ইমেজের’ অধিকারী সানু ইতিমধ্যে ভোটে জয়লাভ করার মত ক্ষেত্র তৈরি করে ফেলেছেন। উপরন্তু রয়েছে ধানের শীষ প্রতীকের জনপ্রিয়তা। এ দুইয়ে মিলে মাহমুদুল হক সানু টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়ে চমক দেখালে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর ধানের শীষের নবীন প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু প্রচারণায় ঈর্ষণীয় পর্যায়ে এগিয়ে থাকলেও দিন গড়ানোর সাথে সাথে শেষ দিকে এসে প্রচারণায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা সহ তার নিজস্ব কর্মী-সমর্থকরা প্রচারণায় থাকলেও তাদের মধ্যে কেমন এটা গা-ছাড়া ভাব ভর করেছে। আর প্রতিপক্ষের নৌকা প্রতীকের প্রবীণ প্রার্থী জামিলুর রহমান মিরন সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী জামিলুর রহমান মিরন জানান, বিগত সময়ে দুই বার মেয়র পদে জনগন তাকে নির্বাচিত করেছে, ভোটারদের কাছে তিনি পরীক্ষিত। তিনি আশা করেন, এবারও মেয়র পদে ভোটাররা তাকেই নির্বাচিত করবে। মেয়র পদে নির্বাচিত হলে তিনি মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত পৌর এলাকা গড়ে তুলবেন এবং পাশাপাশি যানজট, রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ সকল প্রকার উন্নয়নের কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু জানান, তিনি প্রথমবার মেয়র পদে দাঁড়িয়ে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। জনগণ তার পক্ষে ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে। তিনি এবার মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। নির্বাচিত হলে তিনি সুন্দর ও পরিকল্পিত পৌর এলাকা গড়ে তোলার পাশাপাশি সব ধরনের উন্নয়নের কাজ সুষ্ঠুভাবে করবেন।
১২৮ বছরের টাঙ্গাইল পৌরসভা ২৯.৩৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনে ও ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পৌর এলাকার মোট ভোটার ৯৪ হাজার ৬৪৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৬ হাজার ১৩০ ও নারী ভোটার ৪৮ হাজার ৫১৪ জন। হালনাগাদ ভোটার নিয়ে নতুন ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার।