গণবিপ্লব রিপোর্টঃ
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে হুন্ডি ব্যবসা এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ফাঁকি দিয়ে এলেঙ্গা পৌর-শহরে ডজন খানেক ট্রাবেল এজেন্সী ও ফার্নিচার দোকানে পর্দার অন্তরালে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে বিনাবাধায়। সরকারের কঠোর নির্দেশ উপেক্ষা করে পুরো উপজেলায় অর্ধশত ছোট বড় হুন্ডি ব্যবসায়ী এলাকাকে হুন্ডির স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছে। বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ঝামেলা মনে করে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো হয় এবং এতে সরকার হারাচ্ছে প্রচুর পরিমাণ রেমিটেন্স।
সূত্র জানায়, কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার এলেঙ্গা-ভূঞাপুর পরাতন সড়কের শামসুল হক ডিগ্রী কলেজ’র অপর পাশে এলাকার শীর্ষ চোরাচালানি ব্যবসায়ী দেলুয়ার ও তার ছোট ভাই দোকানের প্রো. আতোয়ার হোসেন ঢাকা ফার্নিচারের দোকানের আড়ালে দিনের পর দিন পুরো উপজেলা জুড়ে ডলার ও হুন্ডি ব্যবসায়ী চক্রের নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। তার দোকানে নামে মাত্র কয়েকটি ফার্নিচার সাজিয়ে রেখে কাজ করে এর আড়ালে তিনি বেআইনীভাবে হুন্ডি ও ডলার ব্যবসা করে থাকেন। প্রতিদিন গড়ে কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে শতাধিক হুন্ডি ও ডলার ব্যবসায়ীর মাধ্যমে। এই চক্রটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশীদের উপার্জিত টাকা বিধি মোতাবেক বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে নিজেরা এজেন্টের মাধ্যমে কালেকশন করে নিজেদের লোক দিয়ে হাতে হাতে দেশে থাকা পরিবারের মধ্যে বিলি করে থাকেন।
কালিহাতীতে এধরনের শতাধিক খুচরা এজেন্ট থাকলেও দেলুয়ার এ চক্রটির মূল এজেন্ট। তিনি প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকা লেনদেনের পাশাপাশি ডলার, দিনার, দেরহাম, রিয়াল, রিগিংট, ইউরো, পাউন্ড, রুপিসহ বিদেশী মুদ্রা ব্যবসা ও পাচারের সাথে জড়িত থাকার কথা জানা যায়। এতে করে সরকার প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। কালিহাতী উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়নে অন্তত শতাধিক হুন্ডি ও ডলার ব্যবসায়ী রয়েছে। এ চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। এ যেন সরিষার মধ্যেই ভূত। এলেঙ্গা বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, হুন্ডি ও ডলার ব্যবসায়ী দেলুয়ার ফার্নিচার ব্যবসার আড়ালে তার ছোট ভাই আতোয়ারকে দিয়ে হুন্ডি এবং ডলার ব্যবসা করে অল্পদিনে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তার চলাফেরা এখন অভিজাত। এলেঙ্গা শামসুল হক ডিগ্রী কলেজ’র অপর পাশে কোটি টাকা মূল্যের জায়গা ক্রয় করে মার্কেট নির্মাণ করছেন। তার রয়েছে ২টি হায়েস, ১টি এলিয়োন গাড়ী।
প্রতিমাসে মাসোয়ারা দেয়ার ফলে হুন্ডি দেলুয়ার ও তার ভাই আতোয়ারকে প্রশাসন আটক করছে না বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়।
এই ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে হুন্ডি দেলুয়ার বলেন, আমি এসবের সাথে জড়িত না, আমি গাড়ী ও ফার্নিচারের ব্যবসা করি।
এবিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার মো. আখেরুজ্জামান মিয়া’র সাথে থানার মুঠো ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।