বুলবুল মল্লিক:
টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সিএন্ডবি সড়কের ১০টি ব্রিজের মধ্যে ৮টিই ঝুঁকিপূর্ণ, জানমালের ঝুঁকি নিয়ে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। কর্তৃপক্ষ ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ সাইনবোর্ড ও পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প পাঠিয়ে দ্বায়িত্ব পালন করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুসেতু সংযোগ সড়কের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা থেকে ভূঞাপুর পর্যন্ত ছোট-বড় ব্রিজ রয়েছে ১০টি। ব্রিজগুলো হচ্ছে রৌহা, রাজাবাড়ি, শ্যামপুর, সিংগুরিয়া, কাগমারীপাড়া, ফুলতলা, সয়া, তাতিহারা, নারান্দিয়া ও শিয়ালকোল ব্রিজ। এরমধ্যে ৮টি ব্রিজই মারাতœক ঝুঁকিপূর্ণ। সিংগুরিয়া ব্রিজটির অর্ধাংশে বেইলী ব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে। ফুলতলা, শ্যামপুর, নারান্দিয়া এবং রাজাবাড়ি ব্রিজ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে ফুলতলা ব্রীজের দুইপাশের রেলিং ভাঙ্গা, শ্যামপুর ব্রীজের কয়েকটি স্টিলের পাটাতন উঠে গেছে, নারান্দিয়া এবং রাজাবাড়ি ব্রিজ দুটোর অবস্থা একেবারে নাজুক। এছাড়া রৌহা, শিয়ালকোল ও কাগমারিপাড়া ব্রিজেরও একই অবস্থা।
ঝুঁকিপূর্ণ ৮টি ব্রিজ যে কোনটি যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অকল্পনীয় ক্ষতি হতে পারে। এ সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনাও ঘটছে। প্রাণহানীর পাশাপাশি আহত হয়ে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। এতে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়ক দিয়ে টাঙ্গাইল, কালিহাতী, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাফেরা করেন। এছাড়া তারাকান্দি সার কারখানার মালবাহী যান চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এবং বঙ্গবন্ধু সেনানিবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ এ সড়কে চলাচল করেন।
আব্দুল হালিম নামে এক ট্রাক চালক বলেন, মালামাল নিয়ে এ ব্রিজগুলোতে উঠার সাথে সাথে জোরে ঝাঁকুনি দেয়। মাঝে মাঝে মনে হয় ব্রিজ বোধহয় ভেঙে গেল। খুব ভয়ে ভয়ে আল্লাহ-রসুলের নাম জপতে জপতে পাড় হই। টাঙ্গাইল থেকে নলিনগামী এক বাস যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, এ সড়কে কর্তৃপক্ষের নজনদারি দেখে মনে হয় তারা ব্রিজ ভেঙ্গে ভয়াবহ প্রাণহানির অপেক্ষা করছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম নূর ই আলম জানান, টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর সড়কটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়কের ১০ টি ব্রিজ, ১ টি কালভার্ট এবং ২১ কিলোমিটার রাস্তা চওড়া করার জন্য ১১৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বেশ কিছুদিন আগে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু কবে নাগাদ অনুমোদন হবে তা তিনি বলতে পারবেন না।