দেলদুয়ার সংবাদদাতাঃ
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে বিসমিল্লাহ নামক ইট ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভাটার বিধবা শ্রমিক (রাধুনি) এ অভিযোগ এনেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে দেউলী ইউনিয়নের মাইঠাইন গ্রামে ।
জানা যায়, গত ৩১ জুলাই বিকাল ৫ টায় মাইঠাইন বিসমিল্লাহ ইট ভাটার মালিক বাদল দত্ত ও তার সহযোগী ভাটার বিধবা শ্রমিককে ভাটার রান্না ঘরে পালা ক্রমে ধর্ষণ করে। ওই বিধবার বাড়ি আটিয়া ইউনিয়নের ঘুণিকিশোর গ্রামে। ঘটনাটি প্রথমে আটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জি: সিরাজুল ইসলাম মল্লিককে জানালে তিনি এর মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হন। পরে বিধবা ৩ আগষ্ট দেলদুয়ার থানায় ওই ২ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দিতে যান। পরে ১২ আগষ্ট আবার অভিযোগপত্র নিয়ে থানায় গেলে থানা অভিযোগ গ্রহন করেনি বলে জানান ওই বিধবা। গত রোববার তিনি দেলদুয়ার উপজেলা প্রেস ক্লাবে এসে লিখিতভাবে ঘটনার বর্ননা দিয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ইট ভাটার মালিক আমির হামজা ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে বলেন, আমাকে ও আমার সহযোগী বাদল দত্তকে সামাজিকভাবে হেয় ও আমাদের ব্যবসার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মহিলাটি। তার মেয়ের জামাই তাকে দিয়ে অর্থনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যে হাসিল করার জন্য বানোয়াটি এসব কল্পকাহিনি তৈরি করেছেন।
বাদল দত্তের খোঁজে ভাটায় গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে মঙ্গলবার আটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সিরাজ মল্লিক জানান, বাদলের লোকজন আমার কাছে মিমাংসার জন্য আসলেও বাদল এখনও পর্যন্ত আসেনি। আমি ভীন্ন একটি সুত্রে জানতে পেরেছি; বাদল কোন মিমাংসা চায়না। বরং ডিবি পুলিশের কাছে ভুক্তভোগী মহিলার মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। মহিলাটি কোন প্রকার সহযোগীতা চাইলে আমি অবশ্যই তার পাশে দাঁড়াবো। তবে চেয়ারম্যান ঘটনা জানার পরও এখনো মহিলার বাড়িতে যাননি। বরং তিনি অপেক্ষায় রয়েছেন ভিকটিম তার কাছে আসবে।
মাইঠান গ্রামের ইউপি সদস্য রাসেল মিয়া জানান, বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করেছি কিন্তু অভিযুক্তরা মিমাংসার দিন ধার্য করে আবার বাতিল করে দিয়ে ডিবি পুলিশের কাছে মহিলাটির মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছে। মিমাংসার প্রস্তাব আটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে তারাই দিয়েছিলো।
ভুক্তভোগী বিধবা মহিলা জানান, আমি ঘটনার দিন বিকেল রান্না করছিলাম। ওই সময় ভাটায় কেউ ছিলনা। বাদল সুযোগ পেয়ে আমাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় বাদলের সহযোগী আমির হামজাও আমার সম্ভ্রম লুটে নেয়। আমি ভয়ে ও লজ্জায় কারো কাছে কিছু বলেনি। কিন্তু আমার মেয়ের জামাই আমার বেতনের পাওনা টাকার জন্য ভাটায় গেলে সে এক লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে বলে ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছে প্রভাবশালী বাদল। আমার স্বামী মারা গেছে প্রায় ২০ বছর আগে। আমার কোন ছেলে সন্তান নেই। আমি খুবই নিরিহ। প্রভাবশালী বাদলের ভয়ে আমি আতঙ্কিত জীবন যাপন করছি। আমাকে যারা ধর্ষণ করেছে আমি তার বিচার চাই। আপনার আমার পাশে দাঁড়ান।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার কাছে মামলা করার জন্য কেউ আসেনি। তবে ঘটনা মিমাংসা করার জন্য ওই গ্রামের একজন মেম্বার এসেছিলো। মামলা করতে চাইলে আমরা অবশ্যই মামলা নেবো।