মধুপুর প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার পাড়াটঙ্গি গ্রাম থেকে তানিম নামে আট বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্র অপহরণের ৯ দিন পর তার দ্বি-খন্ডিত গলিত লাশ উদ্ধার করেছে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে মধুপুরের গহীন বন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ঘটনার সাথে জড়িত রবিন নামে এক যুবকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তার দেওয়া তথ্য ও মোবাইল ট্র্যাকিং করে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ টাঙ্গাইলের মধুপুর বনে অভিযান চালায়। দীর্ঘ দুই ঘন্টা অভিযান চালিয়ে শিশুর দ্বি-খন্ডিত লাশ ও তার বইসহ ব্যাগ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিশু তানিমের পরিবার ও এলাকায় শোকের মাতম বইছে। গত ১৯ জুলাই বুধবার বিকালে মাদ্রাসা ছুটির পর মাদ্রাসার সামনে থেকে তানিমকে অপহরণ করা হয়।
স্থানীয় ও স্বজনরা জানায়, মুক্তাগাছা উপজেলার পাড়াটঙ্গি গ্রামের জসিম উদ্দিন ফরাজীর আট বছরের শিশু সন্তান তানিম ফরাজী একই এলাকার মাদ্রাসাতুস সুফ্ফা নামে এক মাদ্রাসায় নাজেরা বিভাগে লেখাপড়া করত। ঘটনার দিন মাদ্রাসা ছুটির পর বিকাল সোয়া তিনটায় অন্যদের সাথে তানিমও মাদ্রাসা থেকে বের হয়। এর পর থেকেই সে নিখোঁজ হয়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সোমবার (২৪ জুলাই) ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি থেকে রবিন নামে এক যুবককে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য ও কিলারদের মোবাইল ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে মধুপুরের বন থেকে তানিমের দ্বি-খন্ডিত গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আখতার মোর্শেদ জানান, উপজেলার পাড়াটঙ্গি গ্রামের জসিম ফরাজীর দূর সম্পর্কের আত্মীয় উপজেলার কান্দুলিয়া গ্রামের শাকিল নামে এক যুবক একই এলাকায় দুই মাস আগে বাসা ভাড়া নেয়। এর পর থেকে তাদের সাথে শাকিলের উঠাবসা শুরু হয়। এ সুযোগে ঘটনার দিন মধুপুর বনে বানর দেখার কথা বলে শিশু সন্তান তানিমকে মাদ্রাসা ছুটির পর মাদ্রাসার গেইট থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে মধুপুরের গহিন বনে নিয়ে যায়। পরে শাকিল শিশুর গলা টিপে ধরে আর সহযোগি ওসমান আলী নাকে গুল ধরে রেখে শিশুটিকে হত্যা করে। আর গ্রেপ্তারকৃত যুবক রবিন দাঁড়িয়ে থেকে তাদেরকে সাহস যোগায়।
গ্রেপ্তারকৃত যুবক রবিন থানা পুলিশকে জানায়, কথা ছিল শিশুটি হত্যার পর তার বাবা-মা’র কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে তাদের মাঝে বন্টন করা হবে। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই তাদের প্রধান শাকিল পালিয়ে যায়।
ঘটনার সাথে জড়িত মূল কিলার শাকিল ও আরেক সহযোগি ওসমানকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে ওসি জানান।