
টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে এক নারীর অনশন ঘিরে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার একটি গ্রামে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আবদুর রশিদ (২১) ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার দুপুরে ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় রশিদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে, পাশাপাশি তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার অনুযায়ী, বছরখানেক আগে ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে রশিদ ও ওই নারীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছয় মাস আগে তাঁরা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন। সম্প্রতি রশিদ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রশিদের বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসেন ওই নারী। দুপুরে তাঁকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়, যার ফলে তাঁর শরীরে রক্তাক্ত জখম হয়।
একজন স্থানীয় সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যান। পরে ভিডিও দেখে ওই নারীর বাবা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী বলেন, “স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে রশিদের বাড়িতে অনশনে বসেছিলাম। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে কঞ্চি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। আমাকে ৩০ মিনিট ধরে পেটানো হয়েছে। আমি এই নির্যাতনের বিচার দাবি করছি।”
অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রশিদ বলেন, “ওই নারী আমার সঙ্গে প্রেম করার সময় তাঁর বয়স, আগের বিয়ে, দুই সন্তানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গোপন রেখে প্রতারণা করেছেন। মাস দুয়েক আগে বেড়াতে গেলে ওই নারীর বোনের জামাই পরিকল্পিতভাবে আমাকে আটক করে কাবিননামায় স্বাক্ষর রাখেন। আমার চেয়ে ওই নারী ১০ বছরের বড়। কয়েক দিন আগেও আমাদের বাড়িতে উঠেছিল। বারবার বিরক্ত করায় তাঁকে গাছে বেঁধেছিলাম। কিন্তু কোনো ধরনের নির্যাতন করিনি। মেয়েটির ভয়ে আমরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছি।”
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, “মামলার তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”